স্বামি স্ত্রী অভিমান ইসলামিক গল্প.....
এই সব হাবিজাবি লিখে এসেছি আর কিছু শান্তিদায়ক কাজও করে এসেছি। ফ্রীজের সব খাবার ফেলে দিয়ে এসেছি যেনো সে আজ রাতে না খেয়ে থাকে😡।
কাল থেকে সে হোটেলে খাবে তারপর ওর পেট খারাপ করবে তাই ওষুধের বক্সটাও লুকিয়ে রেখে এসেছি।
ওর সব শার্ট প্যান্ট ও লুঙ্গিসহ ওর সব কাপড় পানিতে চুবিয়ে রেখে এসেছি যেনো ঐ সব ওর ধুয়ে শুকিয়ে আয়রন করতে কষ্ট হয় আর রাতে ঘুমানোর জন্য যেনো লুঙ্গি না পায়😝।
বলে কি না বউ ছাড়াই সে দিব্যি চলতে পারবে! চল এখন একা একা, আমি তো চলেই এসেছি😡।
এখানে আসার পর একা এসেছি বলে আম্মু এক ঝাড়খানেক প্রশ্ন করলো। যেনো আমি কি না তে কি অপরাধ করেছি।
এমন মা পৃথিবীতে এক পিচই আছে যে নিজের মেয়ের থেকে জামাইকে বেশী বিশ্বাস করে, অসহ্য😠!
সারাটা দিন এই সব সাত পাঁচ ভেবেই শেষ করলাম।
সন্ধ্যে হতেই বেশ খুশি খুশি লাগছে কারণ এই সময় রোদ্দুর বাসায় ফিরে। আজ বাসায় ফিরে দেখবে ওর বউ পালিয়ে গেছে, কি মজা😋!
পালানো শব্দটা খুব একটা ভালো শব্দ নয় মনে হয়, তাই পালানোটা বাদ।
আসলে তো আমি রাগ করে এসেছি এটাকে কি পালানো বলা যাবে?
বাসায় ফিরে হতভাগাটা লুঙ্গীটাও পাবে না, লুঙ্গী পানিতে চুবিয়ে এসেছি।
অফিসে যে প্যান্ট পরে গেছে সারা রাত হয় সেই প্যান্ট পরে থাকতে হবে নয় বস্ত্রহীন, কি মজা!
এই সব ভেবে বেশ শান্তি লাগছে। বউ ছাড়া নাকি ওর দিব্যি চলবে। চল এখন লুঙ্গি ছাড়া😡।
রাত আটটা বাজে
সে বাসায় কোনো খাবার পাবে না এমন কি বিস্কিটের কৌটোও লুকিয়ে রেখে এসেছি, কি মজা! বলে কি না বউ ছাড়া তার দিব্যি চলবে!
এখন শুধু বউ নয় খাদ্য দ্রব্য ছাড়াও চল😡।
নয়টা বাজে
বউ ছাড়া নাকি তার দিব্যি চলবে! চল এখন লুঙ্গি খাবার ওষুধ সব কিছু ছাড়া😡
আমি ছাড়া রাতে ওকে সুরা মুলক তিলওয়াত করার কথা মনে করিয়ে দেবে কে?
নিজ থেকেই পড়ে নিক এখন থেকে!
রাত দশটা বাজে
এতক্ষণে খালি পেটে ওর পেটে এসিডিটি শুরু হয়ে গেছে।
কিন্তু ওষুধ খুঁজে পাবে না। সারা রাত পেটে এসিডিটি নিয়ে সে নিশ্চই ঘুমাতে পারবে না, কি মজা! বলে কি না বউ ছাড়া ওর দিব্যি চলবে!
এখন পেটে এসিডিটি নিয়ে দারুণ করে চল হতভাগা😡
ফজরের সলাত বাসায় বাসায় পড়ার জন্য অকে আর কেউ বকা দেবে না!
আমি ছাড়া ও আরামেই থাকবে!!
রাত এগারোটা বাজে
কিন্তু আমার ঘুম আসছে না।
হঠাৎ মনে হলো ওর ঘুম না হলে ওর ভীষণ মাথা ব্যাথা করে।
ওর মাইগ্রেইন আছে।ইস্ মাথা ব্যাথায় সে খুব কষ্ট পায়। ওষুধ গুলোও লুকিয়ে রেখেছি।
এটা করা বোধ হয় ঠিক হয়নী।
ফোন করে না হয় বলি যে, ওষুধের বক্স ফ্রীজের পেছনে লুকিয়ে রেখেছি। নাহ থাক বলবো না, বউ ছাড়া যদি ওর চলে তাহলে ওষুধের ব্যবস্থাও করে নিক😡।
সে তো একটি বারও আমাকে ফোন করেনী তাহলে আমি কেনো যেচে ফোন করবো? বর ছাড়াও আমার দিব্যি চলবে😏।
রাত বারোটা বাজে,
মরার ঘুম কেনো আসছে না?
এই এক বছরে ঐ হনুমানটার সাথে থেকে থেকে দেখছি আমার বদ অভ্যেস হয়ে গেছে।
একলা ঘুমই আসছে না! ধ্যাত্তেরি! সারা রাত কি জেগেই কাটাবো নাকি😫?
একটা রাত না হয় জেগেই পার করলাম কিন্তু রোজ যদি ঘুম না আসে তাহলে কি করবো😢?
ওকে তো চিঠিতে লিখেছি যে আর কখনো ফিরে যাবো না।
আর ওকেও নিতে আসতে বারণ করেছি। সত্যিই যদি নিতে না আসে তাহলে আমার কি হবে😰?
মান সম্মান বিসর্জন দিয়ে হ্যাংলার মতো তো আর যেচে যেতে পারি না!
কি করতে যে রাগ করে এলাম😖? এলামই না হয় কিন্তু চিঠিটা না লিখলেই পারতাম!
আর ঐ মহাপুরুষও কি বেয়াদব যে চিঠিতে যা লিখেছি সেটাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে😡!
অন্য কথা বললে তো উনি এ কান দিয়ে শোনেন আর ঐ কান দিয়ে বের করে দেন। আর এটার বেলা দেখছি হাদীসের মত পালন করছে😔
আসলে সে আমাকে ভালোই বাসে না।
এক বছর দুই মাস হলো বিয়ে হয়েছে আমাদের আর ঐ ভালবাসাহীন মানুষটার সাথে থেকে থেকে কি করে যেনো আমি ওকে ভালবেসে ফেলেছি😔।
আর সে আমাকে একটুও ভালবাসেনি
এসব ভেবে নিজের জন্য দুঃখ পেয়ে কাঁন্না আসছে😭😭
সব দোষ আম্মুর, আম্মুর পছন্দেই আমার বিয়ে হয়েছে।
আমি ঐ হনুমানটাকে বিয়ে করবো না বলে বিয়ের দিন খুব কেঁদে ছিলাম😫 এই সব ভেবে আম্মুর উপর খুব রাগ হচ্ছে 😖
এখনই আম্মুকে ডেকে এর হেস্ত নেস্ত করেই ছাড়বো😡
কিন্তু এত রাতে ঘুম থেকে ডাকা বোধ হয় ঠিক হবে না।
সকাল হোক এর হেস্ত নেস্ত করেই আমি ছাড়বো😔।
রাত একটা বাজে, হনুমানটা ঘুমিয়েছে কিনা কে জানে।
ওর মনে হয় খুব খিদে পেয়েছে। না খেয়ে এতক্ষণে ওর পেটে এসিডিটি শুরু হয়েছে মনে হয়। এসিডিটি নিয়ে ওর মনে হয় ঘুম আসছে না😖।
তাহলে এতক্ষণে ওর মাইগ্রেইন শুরু হয়েছে।
একবার ফোন করবো? না থাক, ওর তো বউ ছাড়া দিব্যিই চলবে।
সে তো পারতো একটি বার আমাকে ফোন করতে! কিন্তু করেনী, মানুষ কত খারাপ হলে নিজের বউয়ের খোঁজ নেয় না!
এই সব স্বামীদের পুলিশে দেয়া উচিত।
রাত দুইটা- তিনটা- চারটা- পাঁচটাও শেষ এখন ছয়টা বাজে।
সারাটা রাত একটা মিনিটও ঘুমাইনী। ওকে শিক্ষা দিতে গিয়ে আমি নিজেই শিক্ষিত হয়ে গেছি।
এখন তো দেখছি ওর বউ ছাড়া দিব্যিই চলছে কিন্তু আমারই বর ছাড়া চলছে না!
এসব ভেবেই কাঁন্না পাচ্ছে😭
সাতটা বাজে, হনুমানটাকে না ডাকলে তো ওর ঘুম ভাঙে না।
তাহলে অফিসে যাবে কি করে? একবার ফোন করে ডেকে দিই না হয়। না থাক, ওর তো বউ ছাড়াই দিব্যি চলবে তাই অফিসটাকেও চালিয়ে নিক😡
সকাল আটটা বাজে,সে ঘুম থেকে উঠলো নাকি সারা রাত মাইগ্রেইন নিয়ে বসে ছিল কে জানে! অফিসে লেটে পৌছালে বসের ঝাড়ি শুনতে হবে।
এক বার না হয় ফোন করে বলি।
নাহ থাক, বউ ছাড়া তো ওর দিব্যি চলবে, এখন বউ ছাড়া ঝাড়ি খেয়ে চলুক।
খালি পেটে ঝাড়ি খেয়ে পেট ভরুক মহাপুরুষের😡
ধ্যাত্তেরী! কিচ্ছু ভাল্লাগছে না।
একটি বার আমাকে ফোন করলে কি হয়? আজব মানুষ একটা! সব দোষ আম্মুর, এমন কেয়ারলেস ছেলেকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছে।
এখনই আম্মুর সাথে এর বোঝা পড়া করবো। আম্মুর রুমে গিয়ে বললাম-“তুমি পৃথিবীতে আর কোনো ছেলে খুঁজে পাওনী আমার গলায় ঝুলানোর জন্য😩?”
আম্মুঃ-“কেনো কি হয়েছে?”
আমি রাগে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বললাম-“এমন ছেলের সাথে আমাকে বিয়ে দিয়েছো যে ছেলে আমাকে ভালোই বাসে না”
আম্মুঃ-“ওমা তাই নাকি? কিন্তু রোদ্দুর তো বললো তুই নাকি ওকে ভালবাসিস না”
আমিঃ-“ঐ হনুমানটা তাই বলেছে? তো এতই যখন ভালবাসে তাহলে কাল থেকে একটি বারও আমাকে ফোন করে আমার খোঁজ নেয়নি কেনো?”
আম্মুঃ-“সে তো বললো তুই নাকি বারণ করেছিস”
আমিঃ-“সে তোমাকে ফোন করেছিল?”
আম্মুঃ-“হ্যা, রাতেই ফোন করেছিল”
আমিঃ-“কই আমাকে তো বলোনি?”
আম্মুঃ-“তুই তো বললি তোর আব্বুর জন্য তোর মন কেমন করছিল তাই এসেছিস। ঝগড়া করে এসেছিস সেটা তো বলিসনি”
আমিঃ-“এটা বলার কি আছে?
ঐ হনুমানের অত্যচারেই তো আসতে বাধ্য হয়েছি”
আম্মুঃ-“সে জন্যই ভাবছি তোকে আর ওখানে ফিরে যেতে হবে না”
আমিঃ-“😱কেনো?”
আম্মুঃ-“ভাবছি তোকে ডিভোর্স করিয়ে আবার বিয়ে দেবো”
আমিঃ-“এই… এই আম্মু তুমি আমার সংসার ভাঙার ষড়যন্ত্র করছো নাকি😥?”
আম্মুঃ-“তুই তো বললি রোদ্দুর তোকে অত্যাচার করে? তাই ডিভোর্স করিয়ে রোদ্দুরকেও একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে দেবো”
আমিঃ-“কি বললে? আমি ভালো মেয়ে নই? আমার স্বামীকে আবার বিয়ে দেবে😡? এই তুমি আসলেই আমার নিজের মা তো? আমার ডাউট হচ্ছে😩”
আম্মুঃ-“তুই তো তোর স্বামীকে ভালোবাসিস না”
আমিঃ-“কে বললো তোমাকে?”
আম্মুঃ-“তোর ভাব ভঙ্গিমা তো তাই বলছে”
আমিঃ-“তাই বলে তুমি আমার সংসার ভাঙার ষড়যন্ত্র করবে😪? এই তুমি নিশ্চই আমার নিজের মা নও। বলো আমার মাকে কোথায় গুম করে রেখে আমার বাবাকে বিয়ে করেছো😐?”
এবার আম্মু বেশ রেগে গিয়ে বললো
আম্মুঃ-“ফালতু কথা বলবি না অবনি😠”
আমিঃ-“আমার সংসার ভাঙার ষড়যন্ত্র করে আমার স্বামীকে বিয়ে দিতে চাইছো, এটা কোনো নিজের মা করতে পারবে?”
আম্মুঃ”তোর মাথার তার ঢিলা সেটা তো তোর জন্মের পর থেকেই জানি।
এখন দেখছি তোর সেই ঢিলা তার খুলে পড়ে গেছে”
আমিঃ-“কি বললে😵?”
মন্তব্যসমূহ